অগ্রদৃষ্টি ডেস্কঃ প্রতিবেশী দেশ ভারতের সরকার ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল করায় বাংলাদেশ সরকারের অকেজো হয়ে গেছে ৫০ কোটি রুপি। সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ৫ লাখসহ চার ব্যাংকের অকেজো হয়েছে ১১ লাখ রুপি।
এসব অকেজো রুপি বদল করে বাংলাদেশি টাকা অথবা আর্ন্তজাতিক মুদ্রা ‘ডলার’ দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গর্ভনরকে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর ড. উর্জিত আর প্যাটেলকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করছি ৫০০ ও ১০০ হাজার রুপির নোট তুলে নেওয়ার ফল ভারতের প্রবাহমান অর্থনীতিকে ভালো আকার দিতে সাহায্য করবে।
তবে, নোট তুলে নেওয়ার বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে নিয়মিত ব্যবসা বাণিজ্য এবং পর্যটেকদের লেনদেনে কিছু বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। যা সন্তোষজনক ভাবে সুরাহা করা প্রয়োজন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক সোনালী ব্যাংক সীমান্ত হাটে বৈধ লেনদেন করে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫শ’ ভারতীয় রুপি জমা করেছে। কাস্টমস, সীমান্ত ও বিমানবন্দর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী কর্তৃক বিভিন্ন সময় জব্দ করা ৫০ কোটির অধিক রুপি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা রয়েছে।
ভারত সরকার তার ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল করার প্রেক্ষাপটে সরকারি রাজস্ব সংরক্ষণের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে থাকা ভারতীয় রুপির পরিবর্তে বাংলাদেশি টাকা অথবা ডলারে রুপান্তর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চিঠিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখা এসব রুপি ভারতে পাঠানোর উদ্যোগ নিতে ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংককে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এজন্য সোনালী ব্যাংক লিমিটেড কলকাতা শাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হেফাজতে থাকা রুপি বদলের জন্য ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বিষয়টি দ্রুত রেজুলেশন আকারে আপনার ব্যক্তিগত মনোযোগ পেতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহন করলে আমরা বাধ্য থাকবো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমস, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিমানবন্দরে আটক এসব রুপি বিষয়ে ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন। মামলার বিচারকার্য সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রতিটি মামলার বিপরীতে একটি করে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট কাস্টমস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন করে কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে বাংলাদেশ ব্যাংকের হেফাজতে নমুনা হিসাবে সংরক্ষণ করা হবে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের কলকাতা শাখার মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে, এতে তারা সাড়া দিয়েছেন। তারা যেভাবে চাইবেন সেভাবেই এসব নোট বিনিময় করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের ৫০ কোটি রুপি ছাড়াও, সোনালী ব্যাংকের ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫শ, অগ্রণীর ৩লাখ, রূপালীর ৩লাখ ও জনতার কাছে ১লাখ রুপি ছিল। চলতি বছরের ১০ নভেম্বর এই তিন ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ থেকে নির্দেশ দিয়ে সব রুপি সোনালী ব্যাংকে জমা নেয়। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড কলকাতা শাখার মাধ্যমে এসব বিনিময়ের চেষ্টা চলছে।
কালো টাকা ও জালনোটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্যে চলতি বছরের ৮ নভেম্বর মধ্যরাত ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। নোট বাতিলে ভারতের আকস্মিক সিদ্ধান্তের কারণে সেখানে চিকিৎসা নিতে যাওয়া শত শত বাংলাদেশিও মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছিলেন।